By সজীব সরকার
সামাজিক বুদ্ধিমত্তা (Cultural Intelligence)
Media School August 22, 2025
সামাজিক বুদ্ধিমত্তা হলো বিশেষ একধরনের যোগাযোগ দক্ষতা।
মানুষ সামাজিক জীব; সমাজবদ্ধ হয়েই মানুষের বসবাস। দৈনন্দিন জীবনে আমরা নানা কারণে বা নানা প্রয়োজনে একে অন্যের সঙ্গে কথা-বার্তা বলি; একসঙ্গে নানারকম কাজে যুক্ত হই। পরিবার এবং এর বাইরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কিংবা সামাজিক অনুষ্ঠান বা আয়োজনে আমরা অংশ নিয়ে থাকি। এসব প্রেক্ষাপটে সঠিকভাবে যোগাযোগ করতে পারার সক্ষমতাকেই বলা যেতে পারে সামাজিক বুদ্ধিমত্তা।
সামাজিক বুদ্ধিমত্তাকে যোগাযোগ দক্ষতা হিসেবে বিবেচনার কারণটি এবার ব্যাখ্যা করা যাক।
যোগাযোগের সময় আমরা পরস্পরের মধ্যে বার্তা (message) বিনিময় করি। এ বার্তা বাচনিক (verbal) বা অবাচনিক (non-verbal) কিংবা দুটোই হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে শুধু বাচনিক বার্তা বক্তার মনের ভাব সম্পূর্ণভাবে বা স্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে পারে না। এ কারণে তার অবাচনিক বার্তাগুলোর দিকেও মনোযোগ দিতে হয়। ওই অবাচনিক বার্তাগুলো বুঝতে বিশেষ যোগাযোগ দক্ষতা দরকার হয়।
এর বাইরেও, ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স বা আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা (নিজের ও অন্যের আবেগকে বুঝতে ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারার দক্ষতা), কালচারাল ইন্টেলিজেন্স বা সাংস্কৃতিক বুদ্ধিমত্তা (বিভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারার দক্ষতা) - এই বিষয়গুলোকেও যোগাযোগের বিশেষ দক্ষতা হিসেবেই বিবেচনা করা হয়।
তাহলে, আমরা যখন সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করি অর্থাৎ প্রতিনিয়ত সমাজের অন্য মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ করি, তখন ওই মানুষদের বার্তার অর্থ বুঝতে পারা, তাদের আবেগীয় অবস্থা অনুধাবন করতে পারা এবং তাদের সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী তাদের সঙ্গে যথাযথভাবে যোগাযোগ করতে পারা - এই বিষয়গুলোর দক্ষতা থাকা খুব জরুরি। কেননা, এসব দক্ষতা বা সক্ষমতা ছাড়া আমরা সফল বা কার্যকরভাবে যোগাযোগ করতে পারবো না। আর, যোগাযোগ ফলপ্রসূ না হলে সে যোগাযোগের কোনো মূল্য থাকে না; আমাদের যোগাযোগের উদ্দেশ্যই পুরোপুরি ব্যর্থ হয়।
তাই, সামাজিক বুদ্ধিমত্তা হলো মূলত যোগাযোগের জন্য দরকারি অনেকগুলো দক্ষতারই সমষ্টি।
তাহলে, মানুষকে বুঝতে পারা, সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও এদের প্রক্রিয়াগুলো সম্বন্ধে জ্ঞান থাকা, সামাজিক নানা প্রেক্ষাপটে যোগাযোগ করতে পারা এবং সামাজিক যোগাযোগে তৈরি হওয়া নানা সমস্যা সমাধান করতে পারা - এমন সক্ষমতা বা দক্ষতাকেই সামাজিক বুদ্ধিমত্তা বলা যায়।