Media School

Dhaka    Friday, 26 April 2024

By নুসরাত জাহান

জেন্ডার

Media School June 16, 2020

জেন্ডার একটি নির্দিষ্ট সমাজে ব্যক্তির সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিকভাবে নির্ধারিত বিশিষ্টতা নির্দেশ করে।

জেন্ডার হচ্ছে নারী ও পুরুষের সামাজিক পরিচয়, যা একই সাথে সামাজিকভাবে নারী-পুরুষের সম্পর্ক ও ভূমিকাকে নির্দেশ করে। এতে নারী ও পুরুষের সাথে সম্পর্কিত মনস্তাত্ত্বিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বোধটি বেশি প্রধান্য পায়। ফলে সমাজ, পরিবেশ ও স্থান বদলের সাথে সাথে জেন্ডার-ধারণা পরিবর্তিত হতে পারে। এ শব্দটির মধ্য দিয়ে ব্যক্তির শারীরিক নয় বরং সামাজিক-সাংস্কৃতিক অবস্থাভেদে নারী ও পুরুষের ভেদাভেদ করা হয়ে থাকে। তবে এখানে মূলত নারী-পুরুষের শারীরিক বিভিন্ন পার্থক্যের ভিত্তিতেই তাদের পৃথক করা হয়ে থাকে। প্রকৃতিগতভাবে একজন মানুষ নারী, পুরুষ বা উভলিঙ্গ হয়ে জন্মগ্রহণ করে। আর সমাজ যখন জন্মগত সেইসব বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে তাদের আলাদা করে, মূলত সেক্ষেত্রে জেন্ডার শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

জেন্ডার একটি নির্দিষ্ট সমাজে ব্যক্তির সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিকভাবে নির্ধারিত বিশিষ্টতা নির্দেশ করে। একজন নারী বা পুরুষের কার কী রকম পোশাক-পরিচ্ছদ হবে, কে কী রকম আচার-আচরণ করবে, কার আশা-আকাঙ্ক্ষা বা প্রত্যাশা কী রকম হবে, সমাজের নানা ধরনের কাজে একজন নারী বা একজন পুরুষের ভূমিকা কী হবে - এই বিষয়গুলো নির্ধারণ করে জেন্ডার বা লিঙ্গ। জেন্ডার বা লিঙ্গ নির্ভরশীল সমাজের ওপর। যেহেতু নারী বা পুরুষের দায়িত্ব, কাজ ও আচরণ মূলত সমাজ কর্তৃক নির্ধারিত হয়, তাই সমাজ পরিবর্তন বা সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে জেন্ডার-ধারণাও বদলে যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, আমরা যখন কাউকে ‘নারী’ বা ‘পুরুষ’ হিসেবে চিহ্নিত করি, তখন সেখানে জৈব-লিঙ্গ নির্দেশ করাটাই মূল উদ্দেশ্য হয়ে ওঠে। কিন্তু ‘মেয়েলি’ বা ‘পুরুষালি’ ইত্যাদি শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে জেন্ডার প্রপঞ্চকে যুক্ত করা হয় যেখানে নারী বা পুরুষের লিঙ্গীয় বৈশিষ্ট্যকে ছাপিয়ে স্বভাব-আচরণগত বেশকিছু বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায়। এ কারণে সেক্সকে ‘জৈবলিঙ্গ’ এবং জেন্ডারকে ‘সামাজিক বা সাংস্কৃতিক লিঙ্গ’ বলে অনেকে অভিহিত করেন।

১৪ শতক থেকে জেন্ডার শব্দটির ব্যবহার হয়ে আসছে। এক্ষেত্রে পুরুষের ক্ষেত্রে ‘পৌরুষ’, নারীর ক্ষেত্রে ‘নারীত্ব’ অথবা ‘উভলিঙ্গ’ - এসব শব্দের মধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে পার্থক্য করার প্রবণতা শুরু হয়। একই সময় থেকে প্রকৃতিগত পার্থক্য বোঝাতে ‘সেক্স’ শব্দটি ব্যবহৃত হতে শুরু করলেও ২০ শতকের আগে তা বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়নি। জেন্ডার মূলত ফরাসি শব্দ যা লাতিন ‘জেনাস’ থেকে এসেছে।

এখানে উল্লেখ্য, সেক্স বা জেন্ডারের আলোচনা মূলত কেবল পুরুষ ও নারীকে ঘিরেই আবর্তিত হয়; এখানে নারী ও পুরুষের বাইরে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীকে অনেকটা সচেতনভাবেই এড়িয়ে যাওয়া হয়।